আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় অতুলপ্রসাদ সেনের স্বদেশভাবনা
অতুলপ্রসাদ সেনের স্বদেশভাবনা
অতুলপ্রসাদ সেনের স্বদেশভাবনা
গীতিকার ও সুরকার অতুলপ্রসাদ সেন বাংলাগানের জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। বাংলাগান সংক্রান্ত যে কোনো আলোচনায় অন্যান্য গীতিকবিদের সাথে অতুলপ্রসাদের নামটিও অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। তিনি মাত্র ২০৬টি গানের রচয়িতা হলও জীবনকালেই তাঁর গীতিকবি সত্তার পুরস্কার পেয়ে গিয়েছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহসহ অগণিত মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধালাভ করেছিলেন।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, রবীন্দ্রনাথের গানের সংখ্যা সোয়া দুই হাজারের মতো, কবি নজরুলের প্রায় সাড়ে তিন হাজার, ডিএল রায়ের গান পাঁচশতকের কিছু বেশি এবং রজনীকান্তের প্রায় তিনশত বারোটি। অতুলপ্রসাদ সেন সমকালীন এই পঞ্চগীতি কবিদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর কেবলই ২০৬টি গান সম্বলিত গীতিগুচ্ছ নামক একটি গীতিগ্রন্থ ব্যতীত অন্য কোনো সাহিত্য সৃষ্টি নেই।
দুই একটি কবিতা যা লিখেছেন তা সাহিত্য সৃষ্টি হিসেবে স্বীকৃত হয়নি। অর্থাৎ, অতুলপ্রসাদ সেন সুরের সাধনাতেই ছিলেন আত্মপ্রাণ সমর্পিত। তাঁর প্রধান পরিচয় তাঁর গান। মাত্র ২০৬টি গানের একটি গীতিগ্রন্থ দ্বারা সুর-সংগীতের জগতে যে আসন তিনি সৃষ্টি করেছেন তা বিরল। প্রেম-বেদনায় সিক্ত অতুলপ্রসাদের প্রতিটি গান অনন্য মাত্রা অর্জন করেছে। যে কারণে গানের সংখ্যা নয় বরং প্রতিটি গানের গভীরতাই সুরের সাগরে তাঁকে অমরত্ব দান করেছে।
তাঁর গানের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা বিশেষভাবে লক্ষণীয় এবং বাংলাগানের অন্যান্য দিকপাল গীতরচয়িতার সাথে তিনি স্মরণীয় ও বরণীয়। উল্লেখ্য যে, বাঙালি এই গীতিকবি বাসা বেঁধেছিলেন। সুরের পীঠস্থান লক্ষ্মৌ শহরে। সুরের মূর্ছনায় যে শহরের বাতাস ভারি থাকতো। সেই সুরই তাঁকে অমরত্বের পথ দেখিয়েছে।
বাংলাদেশে সেই সময়টাতে সাধারণত ধ্রুপদ, খেয়াল ও টপ্পার প্রভাব বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। যেমন রবীন্দ্রনাথের গানের মূলভিত্তি ছিলো ধ্রুপদ। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গানের পটভূমিতে রয়েছে ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পার একচেটিয়া প্রভাব। রজনীকান্ত সেনের গানে পাই ধ্রুপদ ও খেয়ালের যুগল আদর্শের প্রভাব। লক্ষ্ণৌর গীতিকবি অতুলপ্রসাদ সেনই প্রথম বাংলাগানকে অনুপ্রাণিত করলেন ঠুংরির মায়াভরণে।
তাঁর পূর্বে বাংলাগানে ঠুংরির তেমন প্রভাব ছিলো না বললেই চলে। অবশ্য পরবর্তীকালে নজরুল অতুলপ্রসাদের গানে অনুপ্রাণিত হয়ে ঠুংরির এই বিশেষ ধারাকে আরো সম্প্রসারণ করেন। কিন্তু অতুলপ্রসাদ সেন তাঁর গানে সমকালীন গীতিকবিদেরর মতো ধ্রুপদ, খেয়াল, টপ্পাকে গ্রহণ না করে গানের ভিত্তিরূপে ব্যবহার করেন এমন এক সুরভঙ্গি যা ইতিপূর্বে বাংলাগানে ছিলো না।
ঠুংরির ছোট ছোট কারুকার্যে তাঁর গান পরিপূর্ণ থাকতো। যদিও বাংলাগানের বৈশিষ্ট্যে বেমানান বলে ঠুংরির সুরবিস্তার তিনি গ্রহণ করেননি। কিন্তু সুরের অলংকরণ রীতিকে সাদরে গ্রহণ করেছিলেন-যা তাঁর গানকে অন্য সকলের গানের থেকে আলাদা সত্তা দান করেছে। শুধু সুরের প্রসঙ্গে বললে সবটা বলা হবে না। অতুলপ্রসাদ কবি হিসেবেও তাঁর গানের বাণীকে দিয়েছেন একটি অনন্য রূপকল্প।
এ প্রসঙ্গে দিলীপকুমার রায়ের উক্তি উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক, ‘অতুলপ্রসাদের গানের সুরটাই শুধু বৈশিষ্ট্যময় নয় তাঁর গানের পদযোজনাও সমান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ, এমনকি খতিয়ে দেখলে তাঁর বাণীর আবেদন তাঁর সুরের আবদনের চেয়েও বেশী।
অতুলপ্রসাদ সেনের গানের মর্মার্থ গভীরভাবে উপলব্ধি করলে দিলীপকুমার রায়ের এ উক্তি কতটা বাস্তব তা বোঝা যায়।
অতুলপ্রসাদ সেন একজন সার্থক সুরকার এবং একজন বিশিষ্ট কবি। তাঁর কবিসত্তায় যেমন প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অন্তরের বেদনামিশ্রিত প্রেমাতুর হৃদয়ের নিংড়ানো বাণী, তেমনি স্বদেশপ্রেম ও স্বদেশপ্রেমের গভীর ভাব ফুটে উঠেছে তাঁর গানের বাণীতে। মানবমনকে ভাবিত করে বিস্মিত করে অপরূপ সুর ও বাণীর মিশেল। অতুলপ্রসাদের রচনাশৈলী সম্পর্কে নারায়ণ চৌধুরীর উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হলো,
“তাঁর কবি ব্যক্তিত্বের মধ্যে অনেকগুলি বৈশিষ্ট্য এক আধারে এসে বিধৃত হয়েছে : তিনি গভীর ঈশ্বরভক্ত, মরমী-আকুতিযুক্ত, স্বদেশপ্রেমিক ও মানবপ্রেমিক। খতিয়ে দেখতে গেলে তাঁর স্বদেশপ্রেম ও মানবপ্রেম তাঁর নিবিড় ঈশ্বরপ্রেম থেকেই উৎসারিত হয়েছে। ভারতীয় সাধনার পরিভাষায় ঠিক থাকে আধ্যাত্মিক পিপাসার কবি বলা হয় তিনি হয়তো সেই স্তরের কবি নন, কিন্তু সেই অসম্পূর্ণতার স্খালন হয়েছে তাঁর নিবিড় গভীর ভক্তির আকুলতার দ্বারা।
এমন ভক্তির আন্তরিকতামণ্ডিত কবি রবীন্দ্রনাথ ও কান্তকবি রজনীকান্তের দৃষ্টান্ত দিলে আধুনিক বাংলা কাব্যের জগতে আর আবির্ভূত হয়েছেন কিনা সন্দেহ। কী প্রসন্ন সুন্দর বিনম্র তাঁর আত্মনিবেদনের ভঙ্গি, কত অনাবিল তাঁর নিজ জীবনে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে সত্য করে তোলবার অভীপ্সা। কি দেশপ্রেমের কবিতায়, কি মানবদেহের কবিতায়, এমন কি প্রেমমূলক গানেও তাঁর এ নিবিড়-গভীর ঈশ্বরানুভূতি বারেবারেই আপনাকে বিব্যক্ত করেছে।
অতুলপ্রসাদের অন্তর ছিলো প্রেম আর ভালোবাসায় সিক্ত। এ প্রেম যেমন তাঁর দুঃখ ভারাক্রান্ত জীবনের একমাত্র সহায়, আলোর দিশারী, গভীর প্রেমের পরশিয়া তাঁর চির অভিমানী দুঃখ জাগানিয়া স্ত্রী হেমকুসুমের প্রতি, তেমনি আহত হৃদয় চরম অপমানে সমর্পিত হয়েছে ঈশ্বরের আরাধনায়। ঈশ্বরের গানে প্রার্থনার মধ্যদিয়ে ইহকালের সকল যন্ত্রণা থেকে তিনি পরিত্রাণের পথ খুঁজেছেন।
আবার এমন একটি সময়ে অতুলপ্রসাদ সেনের জন্ম যখন বাংলার আবহাওয়া স্বদেশ প্রেমের উন্মাদনায় চঞ্চল। গান, সাহিত্য সাধনা থেকে শুরু করে বক্তৃতা, সভা-মিছিলে সর্বত্র স্বদেশ আর স্বাধীনতার জন্য উত্তেজনা। মাতৃভক্ত অতুলপ্রসাদ সেনের অন্তরেওছিলো গভীর দেশপ্রেম।
অল্পবয়সে পিতা রামপ্রসাদ সেনের মৃত্যুতে সংসারের বেহাল অবস্থা হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রায়ই বড় বড় দেশনেতাদের স্বদেশি বক্তৃতা শুনতে যেতেন এবং ফিরে এসে সেই বক্তৃতা হুবহু বন্ধুদের শুনিয়ে মুগ্ধ করতেন। অতুলপ্রসাদ সেনের রাজনৈতিক আদর্শ ছিলেন রাজনীতিবিদ সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী। তাতে অতুলপ্রসাদ এমনই অন্তপ্রাণ ছিলেন যে, তাঁর সাথে দেখা করতে ও বক্তৃতা শুনতে তিনি ঢাকা চলে আসেন।
কিশোর বয়সেই অতুলপ্রসাদের মনে স্বদেশি নেতাদের জন্য, স্বদেশের জন্য যে প্রেমাতুর হৃদয় জেগেছিল তা সুনীলময় ঘোষের বক্তব্য থেকে আরো স্পষ্ট হবে,
“সুরেন্দ্রনাথও কিশোর অতুলপ্রসাদের দেশ-ভক্তি ও দেশসেবার প্রেরণায় মুগ্ধ হন। অতুলপ্রসাদ ঢাকা থেকেই প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েছেন পরীক্ষার পর অফুরন্ত সময় আর অবসর। যখনই দেশনেতাদের আগমনবার্তা শুনতেন, অতুলপ্রসাদ ছুটে যেতেন তাঁদের বক্তৃতা শুনবার জন্য।
পণ্ডিত বিজয়চন্দ্র গোস্বামী, মনমোহন ঘোষ, আনন্দমোহন বসু, টি. পালিত, প্রতাপচন্দ্র মজুমদার, শিবনাথ শাস্ত্রী প্রভৃতি দেশবরেণ্যদের বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ বিস্ময়ে আনমনা হয়ে যেতেন নিজের ভবিষ্যৎ জীবনের, দেশব্রতের রূপরেখায় আঁচড় দিতেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও প্রবন্ধগুলি যা হাতের কাছে পেতেন নিবিষ্ট মনে পড়তেন।
পিতৃহীন বালকের জীবন বহু ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অবশেষে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে ব্যারিস্টার হয়ে দেশ ও জাতীয় সেবা করবার মানসে ১৮৯০ সালে বিদেশ যাত্রার উদ্দেশ্যে জাহাজে উঠলেন। মা ও মাতৃভূমির সাথে বাহ্যিক যোগাযোগ ছিন্ন করে সে যাত্রা যেন আত্মিক যোগাযোগ দ্বিগুণ করে তুললো। জাহাজে বহু বছর পর হঠাৎ দেখা বাল্যবন্ধু জ্ঞান রায়ের সাথে। তারই অনুরোধে ক্লান্ত কবি গাইলেন,
“একবার তোরা মা বলিয়া ডাক
জগতজনের প্রাণ জুড়াক
হিমাদ্রি পাষাণ কেঁদে গলে যাক
মুখ তুলে আজি চাইরে।
গানটি শেষ না হতেই সাদা চামড়ার কতগুলো শাসকদল ছুটে এসে গান বন্ধ করতে বলে এবং ভারতীয়দের সাথে অসভ্য আচরণ করলে অতুলপ্রসাদ সেন ক্ষুব্ধভাবে এ আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। কোনো অন্যায়কে সহ্য করবার পাত্র তিনি কোনোদিনই ছিলেন না। তিনি স্বজাতির প্রতি, স্বদেশের ভাষার প্রতি অপমান কোনোভাবে সহ্য করলেন না, বরং শাসকদলের রূঢ় আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন।
তাঁর এ আচরণে অন্য ভারতীয়রাও তাঁকে সমর্থন করলেন এবং শাসকগোষ্ঠীর সেই অশোভনীয় আচরণের প্রতিবাদ জানালেন। এই জাহাজেই কবির মনে স্বদেশপ্রেমের চিরস্মরণীয় গানটির সুর গ্রথিত হয়েছিল। স্বদেশের মাটি ছেড়ে যতই জাহাজ ছুটে চলছিলো ততই এই মাতৃকার জন্য প্রাণ কেঁদে উঠছিল। তাই এই মাটির কোনো অপমান সহ্য করা সম্ভব না।
শুধু একা অতুলপ্রসাদের নয় বিলেতে আসার পর কবি অনুভব করলেন স্বদেশের জন্য সকলেরই প্রাণ উদাস। স্বদেশের মাটির স্পর্শ থেকে এত দূরে বিলেতের মাটিতে বসে স্বদেশের প্রতি শাসকের যেকোনো রুঢ় আচরণে প্রাণ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতো বিলেতে পড়তে যাওয়া সকল ছেলেমেয়ের। শুধু তাই নয়, দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি তখন আরো বেশি করে টানতো।
বাংলার গ্রাম-প্রকৃতির প্রতি মুগ্ধতা ও সাহিত্য সংস্কৃতির মধুর রসকে অন্তরে জাগ্রত রাখার লক্ষ্যে বিলেতের মাটিতে সাহিত্য সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য ‘স্টাডি সার্কেল’ নামে একটি সংগঠন জন্ম নিল। মূলত বিলেতের প্রসিদ্ধ সাহিত্যিক এডমন্ড গমের উৎসাহ উদ্দীপনায় ‘স্টাডি সার্কেল’ গঠিত হলেও একে মুখরিত করে রাখতেন সরোজিনী নাইডু, মনমোহন ঘোষ, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় প্রমুখ তাদের স্বরচিত কবিতা ও গানে।
স্টাডি সার্কেলের কোনো এক সভাতেই অতুল প্রসাদ প্রথম গাইলেন তাঁর রচিত স্বদেশ প্রেমের গান। এর সুর মূলত রচিত হয়েছিল ভূমধ্যসাগরের বুকে। ভেনিস নগরের গন্ডোনা চালকদের সম্মিলিত সুর বুকে সঞ্চিত করে তারই সুরে রচনা করেন তাঁর জগদ্বিখ্যাত স্বদেশপ্রেমের গান-
“উঠ গো ভারত-লক্ষ্মী, উঠ আদি-জগত-জন পূজা
দুঃখ দৈন্য করে নাশি করো দূরিত ভারত লজ্জা।
ছাড়ো গো ছাড়ো শোকযাত্রা, কত সজ্জা।
পুন্যকমল কনক ধন ধান্যে । ”
ভারত বন্দনার এমন অভূতপূর্ব গানে উপস্থিত সকলেই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। স্বদেশের মাটি থেকে বহুদূর বসে স্বদেশ মাতৃকার জন্য এমন আকুল করা ভারত আরাধনার গানে বিস্ময়ে উপস্থিত সকল স্বদেশপ্রেমীগণ অশ্রুসিক্ত প্রাণে স্বদেশের মাটির প্রতি মাথা নত করেন। স্বদেশের প্রতি গভীর ভাবনা অতুলপ্রসাদের সারাজীবন জুড়ে ব্যাপ্তছিলো।
তিনি যেমন তাঁর মা-কে ভালোবাসতেন তেমনি ভালোবাসতেন দেশকে। তাই দেশের কাজে তিনি সারাজীবন ছুটে গেছেন, করেছেন। সরাসরি সম্পৃক্ত থেকেছেন স্বদেশের হিতৈষী নানা কর্মকাণ্ডে। সভা জীবনের ঘটনাচক্রে অতুলপ্রসাদ ওকালতি শুরু করেন লক্ষ্মৌতে। তিনি নিজ কর্মদক্ষতা ও সততায় লক্ষ্মৌবাসীর আন্তরিক আস্থা অর্জন করেন এবং তাদের ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হন।
জনহিতকর ও সমাজের মঙ্গলার্থে কৃত কোনো কাজই অতুলপ্রসাদ বিনা সম্ভব হতো না। এমনকি তিনি স্বাগ্রহে প্রধান হয়ে কাজের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতেন। তবে কাব্যচর্চা থেকে কখনই দূরে সরে থাকেননি তিনি। লক্ষ্মৌর কোর্টে প্র্যাকটিসকালে আদালতের সামান্য অবসরেও চলতো তাঁর কাব্যচর্চা।
আরও দেখুন :