নব আনন্দে জাগো

আজকে আমাদের বিষয়ঃনব আনন্দে জাগো

 

নব আনন্দে জাগো

 

নব আনন্দে জাগো

চৈত্র মাসের শেষ দিনে সূর্যাস্তের সাথে পুরাতন বছরকে আমরা বিদায় জানাই। এটি চৈত্রসংক্রান্তি বা বর্ষবিদায় অনুষ্ঠান। হালখাতার মধ্য দিয়ে, বৈশাখের প্রথম দিনের সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নতুন বছরকে আমরা স্বাগত জানাই। যাকে ‘বর্ষবরণ’ বলে। বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব যেন আমাদের প্রাণের উৎসব।

বাংলাদেশ নামের এই বাগানে রয়েছে অনেক জাতিসত্তা আর সম্প্রদায়ের মানুষ। যারা সবাই এই বাগানের হরেক রকমের ফুল। এদেশে বিভিন্ন জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উৎসব পালন করে থাকে।

পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে শহরে ও গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী মেলা। সেসব মেলাকে উপলক্ষ্য করে লোকশিল্পীরা অনেক ধরনের লোকশিল্প সামগ্রী তৈরি করে যেমন – মাটির পুতুল, শখের হাঁড়ি, পাটের শিকা, নানা রকমের খেলনা, শীতলপাটিসহ আরো অনেক কিছু। মিষ্টি, সন্দেশ, মোয়া, মুড়ি, মুড়কি, বাতাসা, নাড়ু প্রভৃতি খাবার বৈশাখী মেলার আয়োজনকে করে তোলে আনন্দময়।

এছাড়া আয়োজন করা হয় যাত্রাপালা, সার্কাস, বাউলগান, লোকনাটক, পুতুলনাচ ও গানের অনুষ্ঠান। এসবই আমাদের সংস্কৃতির অমূল্য অংশ, যা সংরক্ষণ করা আমাদের দেশ ও জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই লোকশিল্পই হলো আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির শিকড়। ‘বর্ষবরণ” আমাদেরকে শেখায় নিজের দেশ ও সংস্কৃতির সান্নিধ্যে এসে নতুন আনন্দে জেগে উঠতে।

বৈশাখ আর জ্যৈষ্ঠ এই দুটি মাসকে নিয়ে শুরু হয় আমাদের প্রথম ঋতু গ্রীষ্ম। গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে চারদিক যখন ক্লান্ত ঠিক তখন কালবৈশাখীর তীব্র ঝড়োহাওয়া প্রকৃতিতে শীতল পরশ বুলিয়ে দেয়। নতুন প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি। গ্রীষ্মের উষ্ণতা আর বৈশাখী উৎসব এই দুটিকে মিলিয়ে এবার আমরা আমাদের শ্রেণিকক্ষে আয়োজন করব ‘হৃদোৎসব’।

 

নব আনন্দে জাগো

 

এই অধ্যারে আমরা যেভাবে অভিজ্ঞতা পেতে পারি-

  • এই উৎসব আয়োজনের জন্য আমরা শ্রেণির সব বন্ধুরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে যাব। এবার আমরা পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে কী কী আচার, অনুষ্ঠান, খাবার, দাবারের আয়োজন করা হয় তার একটি তালিকা তৈরি করব ও বন্ধুখাতায় সংরক্ষণ করব। তালিকা তৈরির সময় আমরা মা, বাবা, দাদা, দাদি, নানা, নানি, এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠজনের সাহায্য নিব।
  • এলাকায় বসবাসরত বিভিন্ন জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের বয়োজ্যেষ্ঠজনসহ লোকশিল্পীদের সাথে কথা বলব। এই কথোপকথন আমরা ধারণ করে রাখব বা লিখে রাখব। এই সব আলোচনা থেকে আমরা ঐতিহ্যবাহী ঘটনা বা লোকগাঁথা, লোকগান, নাটক, যাত্রাপালা, লোকছড়াসহ লোকশিল্প ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানব।
  • বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, বইপত্র, ছবি, ভিডিও দেখে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানব। জাতীয় আয়োজন সম্পর্কেও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তার তালিকা বন্ধুখাতায় সংরক্ষণ করব।
  • এছাড়াও আমাদের পূর্বের গাছটির গ্রীষ্মকালীন অবস্থাটিও দেখে নিব।

এবার সংগৃহীত তথ্যকে ছবি আঁকা, গড়া, নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, লেখা ইত্যাদির সাথে মিলিয়ে নেব। ‘হৃদোৎসব’ এর জন্য শ্রেণিসজ্জা, প্রদর্শন ও উপস্থাপনের পরিকল্পনা করব।

 

নব আনন্দে জাগো

 

এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করতে পারি-

  • শ্রেণিকক্ষ সাজানোর জন্য কাগজকেটে বা জোড়া লাগিয়ে তাতে ইচ্ছেমতো রং করে বিভিন্ন মুখোশ তৈরি করতে পারি। কাগজ ভাজ করেও আমরা অনেক মজার মজার আকার তৈরি করতে পারি। তাছাড়া নকশা করে কাগজ কেটে ঝালর তৈরি করে শ্রেণিকক্ষ সজ্জার আয়োজন করতে পারি।
  • বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অথবা গ্রীষ্ম ঋতুকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ আঁকতে পারি। আমাদের মধ্যে যারা যারা অভিনয় করতে আগ্রহী, তারা মিলে কোন একটি লোকনাটকে অভিনয় করতে পারি।
  • যারা সৃজনশীল লেখা, গান, নাচ, ছড়া, কবিতা পাঠ বা রচনা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তার নিজেদের পছন্দমতো বিষয়ে অংশগ্রহণ নিতে পারি।

এবার ‘হৃদোৎসব” এর নির্দিষ্ট দিনে আমাদের সাজানো শ্রেণিকক্ষে আমরা চিত্র ও সৃজনশীল লেখা তুলে ধরব। সাথে নিজেদের রচিত নাটক, গান, নাচ, ছড়া, কবিতা ইত্যাদি পরিবেশন করব। ‘হৃদোৎসব’-এর মধ্য দিয়ে আমরা সবাই নিজেদের সংস্কৃতিকে যেমন ভালোবাসব তেমনি অন্য সংস্কৃতিকেও সম্মান জানাব।

মূল্যায়ন

নব আনন্দে জাগো

শিক্ষার্থীর নাম:

রোল নম্বর

তারিখ:

শিক্ষক পূরণ করবেন: টিজিতে নির্দেশিত কাজ শেষ করে তার আলোকে প্রযোজ্য বিবৃতিতে টিক দিন

 

নব আনন্দে জাগো

নব আনন্দে জাগো

 

অভিভাবকের মন্তব্য ও স্বাক্ষর:                                                                                  তারিখ:

আরও দেখুনঃ

1 thought on “নব আনন্দে জাগো”

Leave a Comment