আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় নাটকের গানে কোরাসের ব্যবহার
নাটকের গানে কোরাসের ব্যবহার
নাটকের গানে কোরাসের ব্যবহার
গ্রীক নাটকে কোরাস খুবই বড় এক বৈশিষ্ট। অনেক সময়ই এর প্রয়োজন নাট্য বিরতি হিসাবে অথবা দৃশ্য বিভাগের বিকল্প রাগে। অন্যদিকে এই কোরাস ব্যবহারের আরো কিছু প্রয়োজনও ছিল। যেমন পুরাঘটিত ঘটনার বিবৃতি, ঘটনার জটিলতা বা চরিত্র তাৎপর্যের ব্যাখ্যা বা সাধারণীকরণ, প্রায়ই সমাপ্তিতে নাট্য বিষয়ের নীতিকথা উচ্চারণ, কিংবা ঘটনাপ্রবাহে দর্শকমনে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বাণীলিপি।
বিশেষত এই শেষ কারনেই কোরাস হয়ে ওঠে, গিলবার্ট মারের বর্ননা মতো, ‘আইডিয়াল স্পেক্টেটর’। রবীন্দ্র নাটকের গানের এই কোরাস ধরনের ব্যবহারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরন আছে নৃত্যনাট্য ‘শ্যামা’য়। এই নৃত্যনাট্যে সখিদলের ভূমিকা মনে পড়তে পারে এই প্রসঙ্গে। বজ্রশেনের ক্রুদ্ধ আঘাতে শ্যামা যখন ভুপতিত তখন ভেতর থেকে ভেসে আসে মন্তব্য গান- ‘হায়।
এ কী সমাপন’ সখীদলের এরূপ উচ্চারণ সর্বজ্ঞা এবং সেই কারণে সর্বত কাব্যশ্রষ্ঠার পক্ষেই বলা সম্ভব, যার অমোঘ টানে শেষ পর্যন্ত নেপথ্যের উচ্চারণ জানতে পারি আমরা।
অমৃত পাত্ৰ ভাঙিলি
করিলি মৃত্যুরে সমর্পন
এ দূর্লভ প্রেম মূল্য হারাল
কলঙ্কে অসম্মানে
প্রথাগত নাটকেও আমরা গানের কোরাস ধরনের ব্যবহার পাই। ‘রাজা ও রানী’র তৃতীয় অংক দ্বিতীয় দৃশ্যে কুমার চলে যেতে চাইলে সখীদের গান যেন কোরাস মন্তব্য- যদি আসে তবে কেন যেতে চাই।’
মুক্তধারা নাটকে রাজার নির্দেশে সেনাপতি বিজয়পাল যখন অভিজিৎকে রাজ শিবিরের পথে নিয়ে গেল তখন বাউল যে গান ‘ও তো ফিরবে নারে, ফিরবে না আর ফিরবে নারে, তা যেন কোরাসের বিকল্প। ‘নটীর পুজা’ নাটকে ‘হিংসার উন্মত্ত পৃথ্বী’ গানে এবং ‘গুরু’ আর ‘অরূপরতন’ এর অন্তগীতির প্রায় নীতিকথনে কোরাসের সঙ্গে ঈষৎ প্রয়োগ গত সাদৃশ্য ধরা পড়ে।
আরও দেখুন :