নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

 

নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

 

নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

কবি জীবনে প্রথম নাটক আরম্ভ করেছিলেন সম্পূর্ণভাবে গানকে অবলম্বন করেই। ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’, ‘কালমৃগয়া’, ‘মায়ার খেলা’ প্রভৃতি গীতিনাট্য আগাগোড়া গান গেয়েই অভিনয় করা হতো। এগুলি দস্তুরমতো নাটক, কোনো বিশেষ ঘটনাকে অবলম্বন করে এর নানা দৃশ্যে বিভক্ত। এতে পাত্রপাত্রীর সমস্ত সংলাপ ছিল গানে। কথাবার্তার ভঙ্গিতে হাত পা নেড়ে গানের সূরে তারা পরস্পরের মধ্যে কথোপকথন চালাতো। এগুলি ছিল সুরের নাটক, এর সঙ্গে কোনো নৃত্য ছিল না।

তারপর বিভিন্ন ধরনের অনেক নাটক কবি লিখেছেন, কিন্তু এই প্রকার সংগীত সর্বস্ব নাটক আর লিখেন নি। মধ্যজীবন হতে দেখা যায়, কবির নাটকে উত্তরোত্তর গানের সংখ্যা বেড়েই চলেছিলো। প্রকৃতি সম্পূর্ণযুক্ত নাটক “শরদোৎসব’ ও ‘ফাল্গুনী’ এর গান ‘আজ আমাদের ছুটি’, ‘আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ’ প্রভৃতিতে কবি গানের সঙ্গে একটু আকটু নাচ প্রবর্তন করেন। শারদোৎসবের গান

আজ আমাদের ছুটি

আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ

 

নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

 

প্রভৃতি গানের সঙ্গে নাচের আমেজ আনবার প্রথম চেষ্টা করেন। ‘ফাল্গুনীতে কবি অন্ধ বাউল সেজে গানের সঙ্গে নিজেই নেচেছিলেন। তারপর নানা ঋতুনাট্যের মধ্যে কবি বিশেষভাবে নাচ প্রবর্তন করেন। এই ঋতুনাট্যগুলি গানের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে গঠিত। পালাগানের মণিপুরী নৃত্যের ভঙ্গিই বেশির ভাগ গ্রহণ করা হয়েছিল, অন্যান্য নৃত্যেও সামান্য কিছু ছিল।

এসব নৃত্য গানকে অনুসরণ করেই নানা ভঙ্গিতে প্রকাশ পেয়েছে, তালের ছন্দের সাথে পৃথকভাবে নৃত্যপ্রদর্শনের চেষ্টা এর মধ্যে করা হয়নি। এই সময় ‘নটীর পূজা’ নাটকে শ্রীমতীর শেষনৃত্য সকলকে যুদ্ধ করে। এটি শান্তি নিকেতনে নিযুক্ত মণিপুরী নৃত্য-শিক্ষকের শিক্ষার ফল, তখন হতেই শান্তিনিকেতনের মেয়েরা এই নৃত্যাভিনয়প্রথা শিক্ষা করতে আরম্ভ করে।

‘নটীর পূজা’ ও ঋতুনাট্যগুলির মধ্যে নাচের প্রবর্তনের ভাবের যে অপূর্ব সুন্দর রসমূর্তি রচিত হতে পারে, কবির উচ্চাঙ্গের আর্টিস্ট মন তা বুঝতে পেরে নাচের দিকে প্রবলভাবে ঝুঁকে পড়েন এবং নাচের নানা রূপ সম্ভাবনা ও পরিকল্পনা চিন্তা করতে থাকেন।

 

নৃত্যনাট্যের পর্যালোচনা

 

আরও দেখুন :

Leave a Comment