আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

উত্তর-পশ্চিম ভারতে মুসলমানদের আগমণের শুরুতে এবং দ্বাদশ শতাব্দীতে দিল্লীতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর উত্তর ভারতের সংস্কৃতিতে প্রভূত পরিবর্তন আসে। পরবর্তী ছয়শ বছরে তুরস্ক পারস্য এবং মধ্য এশিয়ার শিল্প, সাহিত্য, ধর্ম এবং অন্যান্য রীতিনীতির আগমন ঘটে মুসলিম শাসকদের রাজদরবারের শিল্পী এবং জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিদের মাধ্যমে।

মুসলিম শাসনামলের শুরুর দিকে উত্তর ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসে যে সকল বাদ্যযন্ত্রের আগমন হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘তম্বুর’ (কখনও ‘তানবুর’ নামেও পরিচিত)। এটি পর্দাযুক্ত লম্বা গলা বিশিষ্ট লিউট।

হেনরী জর্জ ফার্মার রচিত ‘দি ইভলিউশন অব দি তম্বুর ইন পান্ডোর গ্রন্থ অনুযায়ী আরব রচনাবলি থেকে পর্দাযুক্ত তমুরের বর্ণনা প্রথম পাওয়া যায় নবম এবং দশম শতাব্দীতে এবং এর উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা যায় বাগদাদের বাদ্যযন্ত্র হিসেবে পরিচিত একটি বাদ্যযন্ত্রকে যার কথা বলা হয়েছে Measured Tambur। দশম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে তম্বুর একটি প্রধান বাদ্যযন্ত্র হিসেবে পরিগণিত হয়।

ভারতবর্ষে ১০৭৬ খ্রিস্টাব্দে আফগানিস্তানের শাসক মুহম্মদ গজনবী কর্তৃক পাঞ্জাব অধিকৃত হওয়ার সময় ভারতীয়-পারসা কবি মাসুদ-ই সাদ-ই সালমান লাহোরের রাজসভায় আরবা এবং পারস্য বাদ্যযন্ত্রসমূহের মধ্যে তম্বুর’এর কথা উল্লেখ করেছেন। দিল্লীর প্রথম দিককার পারসা ঐতিহাসিক হাসান নিজামী ১২০০ খ্রিষ্টাব্দে এর উল্লেখ করেছেন।

আমীর খসরু ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষদিকে দিল্লীর রাজদরবারে এই “তদুর এর কিছুটা বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। এ সময় থেকে শুরু করে ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন লেখকের রচনা থেকে প্রায় একই ধরণের বর্ণনা পাওয়া গেছে।

 

আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

চিত্র – সম্রাট আকবরের আমলে অঙ্কিত (১৫৫৬-১৬০৫) যুগল চিত্রকর্মে তম্বুরের ছবি

যুগল আমলের মিনিয়েচার শিল্পকর্মে ‘তম্বুর’ যন্ত্রটির অত্যন্ত সুন্দর কিছু চিত্র পাওয়া গেছে। চিত্র দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় যন্ত্রের মূল অংশ নাশপাতি আকারের, উপরিভাগ চেষ্টা, সাথে যুক্ত একটি সরু গলার মত অংশ যা ক্রমান্বয়ে সরু হয়ে গিয়েছে। গলার শেষ অংশে তার আটকানোর জন্য সাধারণত চারটি খুঁটি থাকতো, খুঁটিগুলো দণ্ডের দুই পাশে অবস্থিত। একটি ব্রিজ বা সওয়ারি থাকতো, যা পাতলা, বর্তমান সেতারের মত নয়।

পর্দাগুলো সূতা দিয়ে দণ্ডের গায়ে বাঁধা হতো। সম্পূর্ণ যন্ত্রটি কাঠের তৈরি। আমীর খসরুর বর্ণনায় পাওয়া যায় যজ্ঞে দু’টি রেশমের তার এবং দু’টি ধাতব তার ব্যবহৃত হতো। এর শব্দ ছিলো তীক্ষ্ণ। আমীর খসরুর পরবর্তী সময়ে দিল্লীর রাজদরবারে অন্যান্য যন্ত্রের মধ্যে তম্বুর বেশ প্রাধাণ্য লাভ করেছিলে।

পঞ্চদশ শতাব্দীতে মুগল শাসনের অব্যবহিত পূর্বে সিকান্দার লোদীর শাসনামলের একটি রচনায় রাজদরবারে নিযুক্ত সংগীতজ্ঞদের মধ্যে একজন তম্বুর বাদক এবং একজন বীণাবাদকের নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত ‘আইন-ই-আকবরী’তে ছত্রিশজন সভাবাদকের নামের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে তাতে চারজন তম্বুর বাদকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

কোন একটি যন্ত্রে এটিই সবচেয়ে বেশি বাদকের সংখ্যা। জাহাঙ্গীরের আমলের একটি অসাধারণ মিনিয়েচার চিত্রকর্মে দেখা যায়। একজন তম্বুর বাদক গ্রাম্য এলাকায় বসে তম্বুর বাজাচ্ছেন।

 

আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

চিত্র – সম্রাট জাহাঙ্গীরের আমলে অঙ্কিত (১৬০৫-১৬২৭ ) যুগল চিত্রকর্মে তম্বুরের ছবি

তমুর ছিলো সুর বাজানোর যন্ত্র। সুর ধরে রাখার যন্ত্র নয়। কালক্রমে কোন এক পর্যায়ে এসে যন্ত্রটির কিছুটা রূপান্তরের মাধ্যমে এদেশীয় যন্ত্রে পরিণত করা হয় এবং শুধু মূল সুর সম্পর্কে গায়ককে সজাগ রাখার জন্য গানোর সহযোগী ড্রোন জাতীয় যন্ত্র হিসেবে এর ব্যবহার শুরু হয়।

স্বাভাবিকভাবে তখন আর পর্দা ব্যবহারের প্রয়োজন থাকলো না। পর্দাবিহীন এই যন্ত্রটির পরিচিতি হলো ‘তম্বুরা’ নামে। ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দীতে সম্রাট আকবর এবং জাহাঙ্গীরের রাজদরবারের চিত্রে এই ধরণের যন্ত্র সহযোগে গান গাওয়ার ছবি পাওয়া যায়।

সেতারের আবির্ভাবে তম্বুরের প্রভাব প্রসঙ্গে আবার ফিরে আসি। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিক পর্যন্ত বিভিন্ন শিল্প নিদর্শনে তম্বুরের অবিরাম উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তবে তখন পর্যন্ত ‘সেতার’ নামে কোন বাদ্যযন্ত্রের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায় নি। অষ্টাদশ শতাব্দীর চিত্রে প্রাপ্ত যন্ত্রগুলো স্পষ্টত তম্বুর ছিলো। কারণ সেতারের সাথে এর গঠনে কতগুলো মৌলিক পার্থক্য আছে।

এই মৌলিক পার্থক্যগুলোর কারণেই উক্ত চিত্রগুলো তম্বুরের, সেতারের নয়, এই মত গবেষক এলাইন মাইনারের। তিনি গবেষণা করে তিনটি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেেছন :

(১) তার আটকানোর খুঁটি বা বয়লার অবস্থান শুধু দণ্ডের দু’পাশে অর্থাৎ দণ্ডের সাথে আনুভূমিক (সেতারে আনুভূমিক ও লম্ব দু’ভাবে বয়লা লাগানো হয়),

(২) দণ্ড ক্রমান্বয়ে সরু হয়ে গিয়েছে ( সেতারে দণ্ড সর্বদা সমান্তরাল থাকে),

(৩) পাতলা ব্রিজের উপস্থিতি (প্রকৃত জওয়ারি অনুপস্থিত)।

অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়েও প্রকৃত সেতারের কোন নিদর্শন পাওয়া যায় না। কিন্তু আরো পরে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে কোম্পানী শাসনামলে ইউরোপীয় শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্মে যার নিদর্শন পাওয়া যায় তাকে প্রকৃতপক্ষে ‘সেতার’ বলে চিহ্নিত করা যায়। কারণ এর তার আটকানোর খুঁটি, দণ্ডের সমাণ্ডারল আকৃতি এবং জওয়ারি করা ব্রিজ – এ সব ক’টি – বৈশিষ্ট্যই বর্তমানকালের সেতারের অনুরূপ।

১৭৯০ সালের একটি নমুনাকে প্রাথমিক সেতারের খুব কাছাকাছি বলে ধরে নেওয়া যায়। এটি হচ্ছে মহারাজা সওয়াই প্রতাপ সিং-এর পর্দাহীন তানপুরা, যা জয়পুরের মহারাজা দ্বিতীয় সওয়াই মান সিং যাদুঘরে সযত্নে রক্ষিত আছে। জয়পুরের মহারাজা সওয়াই প্রতাপ সিং নিবন্ধ তানপুরা বলে যা পরিচিত ছিলো সেতার বলতে তাকেই বোঝানো হয় বলে মনে করতেন।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে এসে বিষয়টি বাস্তবেও তাই হয়েছিলো বলে প্রতীয়মান হয়। যাদুঘরে প্রাপ্ত নমুনাটি যদিও তানপুরা, সেতার নয়, তবু ঐতিহানিক নিদর্শন হিসেবে এর মূল্য অপরিসীম এ কারণে যে, প্রতাপ সিং তাঁর ‘সংগীত সার’ গ্রন্থে নিবন্ধ তানপুরা, অর্থাৎ সেতার এবং অনিবদ্ধ তানপুরা দেখতে একবারে এক রকম, শুধু একটি পার্থক্য ছাড়া, তা হলো পর্দার উপস্থিতি, একথা উল্লেখ করছেন।

যে যন্ত্রটির কথা বলা হলো, সেটির আকার বেশ ছোট, ১৮শ শতকের চিত্রকর্মে যেমনটি দেখা যায়, তবে চিত্রের সাথে পার্থক্য হলো, নয়না দপ্তর সাথে আনুভূমিক এবং লম্ব দুই আবস্থানেই আছে, দণ্ডটিও ক্রমান্বয়ে সরু হয়ে যায় নি, দেহ লাউয়ের তৈরি এবং ব্রিজটি প্রকৃত অর্থে জওয়ারি বিশিষ্টা অর্থাৎ চওড়া এবং উপরিভাগ সমতল। এই বৈশিষ্ট্যগুলো বলে দেয় যে, যন্ত্রটি তত্তালে প্রচলিত ‘তম্বুর এর চেয়ে পৃথক।

অর্থাৎ তম্বুর থেকে এক বা একাধিক ধাপে বিবর্তন ঘটে ইতোমধ্যে অনিবন্ধ ও নিবন্ধ তানপুরার উৎপত্তি হয়েছে, নিবন্ধ তানপুরায় পরবর্তীকালে বাজাবার পদ্ধতি, সুর মেলানোর পদ্ধতি ইত্যাদির বিশেষ কিছু কৌশল যুক্ত হয়েছে যা তম্বুর বাজানোর কৌশলের মত নয়, বরং সেতারের মত। এই কৌশলের প্রয়োজনেই তমুরের আকার পরিবর্তিত হয়েছে। চিত্র থেকে প্রাপ্ত এত সব ধারাবাহিক পরিবর্তন ও বিবর্তনের পর প্রশ্ন জাগতে পারে যে, সেতার যন্ত্রটি কি তদুর যজ্ঞের সরাসরি পরিমার্জিত রূপ?

এক কথায় এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ ঐতিহাসিক নিদর্শনসমূহ থেকে অনেক বিশ্লেষণের পরও কোন গবেষক তম্বুর এবং সেতার – এ দু’টি যজ্ঞের মধ্যে সরাসরি কোন যোগসূত্র আবস্কার করে দেখাতে পারেন নি। বরং এই দুই যন্ত্রের মধ্যে আকেটি যন্ত্রের প্রভাব ঐতিহাসিকভাবে স্বীকার করে নিতে হয়, তা হচ্ছে কাশ্মিরী সেতার।

মিঞা তানসেনের জামাতা নৌবাৎ খাঁর পঞ্চদশ প্রজন্যের বংশধর খসরু বা (আমীর খসরু নামেও পরিচিত) কাশ্মিরী সেতার নিয়ে নানাবিধ গবেষণা করার পর সেতার উদ্ভাবন করেন। সংগীত শিল্পীদের পরিবারে সংগীতের যে ইতিহাস মুখে মুখে প্রচলিত হয়ে এসেছে তা থেকেও এ ধরণের তথ্য পাওয়া যায়।

১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে কোলকাতায় সংগীত গবেষক এলাইন মাইনারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওস্তাদ ওমর খান উল্লেখ করেছেন যে, সেতারের আবিস্কারক খসরু খান কিছুকাল কাশ্মীরে আবস্থান করেছিলেন এবং সেখান থেকেই সেতার যন্ত্রটি আবিস্কারের ধারণা নিয়ে দিল্লীতে ফিরে আসেন। কাশ্মিরের ১৮ শতকের চিত্রকর্মসমূহে এই সেহতার যন্ত্রটির কোন ছবি দেখতে পাওয়া যায় নি।

এ থেকে ধারণা করো যায় যে রাজদরবারের বাইরে লোকজ এলাকায় এই যন্ত্রটির প্রচলন ছিলো। বরং পরিশীলিত সেতার হিসেবে যখন এর আবির্ভাব হলো তখন তা সহজেই উত্তর ভারতের রাজদরবার সমূহে স্থান করে নিলো। কাশ্মীরের সেতার যন্ত্রটি সরাসরি পারস্য সেতার যন্ত্র থেকে এসেছে। এটি পারস্যের সুফী সংগীতের সাথে সম্পৃক্ত। কাশ্মিরী সেতার যন্ত্রের দেহ কাঠের তৈরি, অস্ত্রী তার দিয়ে এর পর্দা তৈরি হয়, তার থাকে সাত থেকে নয়টি।

ছয়টি তারকে নির্দিষ্ট স্কেলে সুর মিলিয়ে বাঁধা হয়, যেগুলো বাঁ হাত দিয়ে বাজাতে হয় না, মূল তার বাজাবার সময় শুধু টোকা দেওয়া হয় (অর্থাৎ ড্রোন হিসেবে ব্যবহৃত হয়)। সবশেষের তার দু’টি জোড়া তার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ তার দু’টি খুব কাছাকাছি থাকে এবং সর্বদা একসঙ্গে বাজানো হয়। এই তার জোড়াতেই মূল সুর বাজানো হয়। তারের সংখ্যা কম হলে দণ্ডটি সরু হয়, বেশি হলে দণ্ডটি চওড়া হয়।

পারস্য সেতারের দণ্ড সরু হতো এবং কাশ্মিরের সেহতারও প্রথম যুগে সে রকমই ছিলো। এগুলো আকারে বর্তমান সেতারের চেয়ে ছোট। কশ্মিরে বর্তমান যুগেও কাশ্মিরী সেতারের চল রয়েছে।

 

আরব্য ও পারস্য বাদ্যযন্ত্র এবং সেতার

চিত্র – কাশ্মিরী সেতার

কাশ্মিরে এই সেতার সেতার অথবা সেতার নামে পরিচিত। সেতারের নাম এবং নামের বানান সম্পর্কে এখানে একটি ব্যাখ্যা প্রদান করা খুব জরুরী। সেতার যন্ত্রের নামের উৎপত্তি পারসা দু’টি শব্দ সেহ (অর্থাৎ তিন) এবং তার (অর্থাৎ তন্ত্রী) থেকে। পরবর্তীকালে সেহতার নামটি সহজ হয়ে শুধু সেতার নামে পরিচিত হয়। নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আধুনিক যুগে আমরা যে সেতার পেয়েছি সেটি এখন এই নামে পরিচিত।

এর তারের সংখ্যাও এখন আর তিন নয়, আরো বেশি। উল্লেখ করা প্রয়োজন, এর ইংরেজি নামকরণ করা হয় Sitar এবং সেতারের ইংরেজি নামের এই বানানটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি এবং প্রচার লাভ করে। অপরদিকে ‘সেইতার’ নাম নিয়ে তুলনামূলক অপরিশীলিত একটি রূপ পারস্য, কাশ্মির ইত্যাদি অঞ্চলে প্রচলিত রয়ে যায়। ইংরেজিতে এর বানান লেখা হয় Setar।

অনলাইনে সর্বাধিক প্রচলিত এনসাইক্লোপিডিয়া উইকিপিডিয়া সহ ইন্টারনেটের সকল তথ্য উৎস এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সকল প্রকাশনায় দু’টি বানানের ভিন্নতা বজায় রেখে দু’টি পৃথক বাদ্যযন্ত্রকে নির্দেশ করা হয়। তবে বাংলায় ‘সিতার’ লেখার চল নাই। সেজন্য ‘সেতার’ শব্দ দ্বারা দু’টি যন্ত্রকেই নির্দেশ করলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

বাংলায় প্রচলিত ‘সেতার’ শব্দটিকে আধুনিক কালে বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় সেতার যন্ত্রের জন্য নির্দিষ্ট রেখেই পারস্য যন্ত্রটিকে ‘সেইতার’ বলে বর্তমান রচনায় উল্লেখ করা হলো। ইংরেজি ভাষায় লিখিত বিবরণসূহে এই যজ্ঞটিন নামের বানান কখনো Setar এবং কখনো Sehtar লেখা হয়।

পরিশেষে বলা যায়, পারস্য কোন যন্ত্রের প্রভাবে সেতারের উৎপত্তি সে বিষয়ে এক কথায় কোন উপসংহার দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ কোন একটি যন্ত্রের রূপান্তর নয়, বরং একাধিক যন্ত্রের প্রভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক সেতার পাওয়া যায়। এ কারণে চতুর্থ অনুমানটিকে যুক্তির সাথে বিশ্লেষণ করা দরকার ।

আরও দেখুন :

Leave a Comment