আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় পূর্ণাঙ্গ গান দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত করে ব্যবহার প্রবণতা
পূর্ণাঙ্গ গান দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত করে ব্যবহার প্রবণতা
পূর্ণাঙ্গ গান দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত করে ব্যবহার প্রবণতা
রবীন্দ্রনাথ রচিত নাটক গুলিতে চরিত্রের মুখে একটা পূর্ণাঙ্গ গান গাওয়ার দৃষ্টান্ত বশি। সমস্ত ঘটনা ও সংলাপ থামিয়ে দিয়ে ‘রাজা ও রাণী’-তে ইলা গান গায় এরা পরকে আপন করে, আপনারে পর’ অথবা ‘আমি নিশিদিন তোমায় ভালবাসি’।
‘শারদোৎসব’-এর দশটি গানের মধ্যে দুটি গান বাদে সবগুলো গানের পুরোটাই একসঙ্গে গাওয়া। ‘রাজা’, ‘অচলায়তন’, মুক্তধারা’-ও সব গানই এই রকম নাট্য ব্যাপারকে থামিয়ে দিলে গাওয়া। কিন্তু নাট্য ব্যাপারকে এইভাবে থামিয়ে দিলে সহ অভিনেতাদের স্বস্তিহীন বিব্রত অবস্থার সম্ভাবনা বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ সচেতন ছিলেন। তাই তিনি অনেক সময় সংলাপের মধ্যে একই গানকে দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত করে বিন্যস্ত করেছেন।
যেমন- ‘শারদোৎসব’ এ আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়’ গানটি ঠাকুরদা ও বালক দলের কথোপকথনের মধ্যে তিনটি অংশে বিন্যস্ত- প্রথমে স্থায়ী, তারপর অন্তরা, তৃতীয় অংশে সঞ্চারী ও আভোগ।
‘রাজা’ নাটকে ঠাকুরদা একবার কথা বলছে স্ত্রীলোকদের দ্বিতীয়া ও তৃতীয়ার সঙ্গে আর তারই ফাকে গাইছে ‘আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায় গানের স্থায়ী অংশ একবার অন্তরা অন্যবার।
‘অচলায়তন’- এর তৃতীয় দৃশ্যে পঞ্চকের গান ‘ওরে ওরে ওরে আমার মন মেরেছে’-ও ক্ষেত্রেও দেখি গানটি পঞ্চক মহাপঞ্চকের সংলাপের দ্বারা তিন টুকরোয় খন্ডিত।
‘রক্তকরবী’-তে বিশুর গান কিছু পুরোটাই একসঙ্গে গাওয়া, কিছু গান দুই বা ততোধিক খন্ডে ভেঙ্গে ব্যবহৃত হয়েছে। নলিনী প্রথমে ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’ গানের দুই চরণ মাত্র গেয়েছে। তারপর নেপথ্যকারী রাজার সঙ্গে চলেছে তার দীর্ঘ সংলাপ, তারপর আবার গেয়ে শেষ করেছে গানটি তখনো গানটি রাজার সংলাপের দ্বারা দ্বিধাবিভক্ত।
প্রথমদিকে রচিত নাটকের পাত্র-পাত্রী অখন্ড গান গেয়েছে, ক্রমে পাত্র-পাত্রীর গান হয়ে ওঠে সংলাপের দ্বারা বিযুক্ত এবং যুক্ত, সংলাপের মধ্যে খচিত বিভিন্ন টুকরোর ছড়ানো।
আরও দেখুন :