ভরতের নাট্যশান্ত

আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় ভরতের নাট্যশান্ত

ভরতের নাট্যশান্ত

 

ভরতের নাট্যশান্ত

 

ভরতের নাট্যশান্ত

নাট্য-সংগীত বিষয়ে এটি প্রধাণতম প্রাচীন শাস্ত্র। এতে নাট্য-সংগীত সম্বন্ধে যেমন পূর্ণ আলোচনা আছে, তেমনি নৃত্য-গীত-বাদ্য এবং ঐকতান সংগীতে উপাদান ও প্রয়োগবিধি সম্বন্ধে বিচিত্র বিশ্লেষণ আছে। ৬০০০ শ্লোক নিয়ে ৩৬টি (মতান্তরে ৩৭টি) পরিচ্ছেদে এটি বিভক্ত। সংগীত বিষয়ে রচনা রয়েছে ২৮ থেকে ৩০ পরিচ্ছেদে।

ভারতীয় সংগীতের ভিত্তি প্রস্তুতিতে এই সংগীতালোচনা অতুলনীয় ভরতের নাট্যশাস্ত্রে গান্ধর্ব সংগীত প্রসঙ্গে বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের বিষয় লিখিত হয়েছে একথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রন্থটিতে আরো বলা হয়েছে নিবন্ধ ও অনিবদ্ধ পদ গাইবার কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে, দু’প্রকার পদেই বেণু, বীণা, ঘন ও মৃদঙ্গ ইত্যাদি বাদ্যের সহযোগ থাকে।

ভরত নাট্যশাস্ত্রে ‘চিত্রা’ ও ‘বিপক্ষী’ এই দু’টি বীণার উল্লেখ করেছেন। ‘চিত্রাবীণা’ সপ্ততন্ত্রীবিশিষ্ট এবং ‘বিপদ্গীরীণা’ নয়টি তন্ত্রীযুক্ত। ‘চিত্রাবীণা’ আঙুল দিয়ে বাজানোর নিয়ম এবং ‘বিপদ্গীরীণা’ ত্রিভুজাকার কোণ বা Plectrum দিয়ে বাজানোর নিয়
প্রকৃতপক্ষে প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশে তারযুক্ত যতগুলো যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছে সবগুলোই কোন না কোন শ্ৰেণীভুক্ত বাঁধা হিসেবে অভিহিত ছিলো।

 

ভরতের নাট্যশান্ত

 

ইতিহাসে ৫৮ ধরণের বীণার উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিও কালের বিবর্তনে এর সব কাটি এখন বিদ্যমান নাই, অধিকাংশই লুপ্ত হয়েছে অথবা এদের রূপান্তর ঘটেছে। তবে সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে যে কয়টি বীণা তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, স্বরস্বতী বীণা, রুদ্র বীণা এবং বিচিত্র বাঁধা। আরো অনেক ধরণের বীণা পরবর্তীতে প্রচলিত হয়েছে, তবে সেগুলোর উৎপত্তি মূলত এই তিন ধরণের বীণা থেকে।

বীণা পরিবার থেকে উদ্ভূত পরবর্তীকালের বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে কিন্নরী বাঁণা এবং আলাপিনী বা উল্লেখযোগ্য। ৪০০ থেকে ৭০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই বাদ্যযন্ত্র দু’টির বিকাশ ঘটে। আলাপিনী বীণা প্রস্তুত করা হতো বড় আকারের একটি শুকনো লাউয়ের সাথে একটি ফাঁপা বাঁশের দণ্ড যুক্ত করে। বাঁশের একপ্রান্তে লাউটি লাগানো থাকতো। দণ্ডের গায়ে মাত্র তিনটি পর্দা লাগানো থাকতো।

দণ্ডের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে মাত্র একটি তার লাগানো থাকতো। পরবর্তীকালে অবশ্য আরো একটি তার এতে যুক্ত হয়। শাঙ্গদেবের আমলে এই যন্ত্রটির কিছু উন্নতি হয় এবং এতে আরো দু’টি পর্দা যুক্ত হয়। কিন্নরী বীণা প্রায় সমসাময়িক কালের। ধারণা করা হয় মাতঙ্গ মুনি এই বীণার স্রষ্টা। এই বীণায় সাতটি পর্দা থাকতো।

 

ভরতের নাট্যশান্ত

 

যন্ত্রটি তিনটি ভিন্ন মাপে তৈরি হতো, সে অনুযায়ী গঠনেও কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। সবচেয়ে ছোট আকারের কিন্নরী বীণাকে বলা হতো লঘু কিন্নরী বীণা। এতে দণ্ডের দু’পাশে দু’টি লাউ সংযুক্ত থাকতো। মাঝারি আকারের অর্থাৎ মধ্যম কিছুরী বীণাতে তিনটি লাউ সংযুক্ত থাকতো। বড় আকারের কিছুরী বীণায় মোট চারটি লাউ সংযুক্ত থাকতো।

আরও দেখুন :

Leave a Comment