Site icon Arts and Culture Gurukul [ শিল্প ও সংস্কৃতি গুরুকুল ] GOLN

রবীন্দ্র উপন্যাসে স্বদেশ

রবীন্দ্র উপন্যাসে স্বদেশ

আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় রবীন্দ্র উপন্যাসে স্বদেশ

রবীন্দ্র উপন্যাসে স্বদেশ

 

 

রবীন্দ্র উপন্যাসে স্বদেশ

নিশ্চল, গতিহীন জড়াগ্রস্ত সমাজ রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে মৃত সমাজ এবং এহেন সমাজব্যবস্থার প্রতিবাদ চেয়েছেন, প্রতিবাদ করেছেন নাটকের মাধ্যমেও। অচলায়তন নাটকটিতেও রবীন্দ্রনাথ সেই স্থবির সমাজ ভাবনারই ইঙ্গিত করেছেন। অচলায়তনের বাসিন্দারা মন্ত্রে তন্ত্রে বিশ্বাসী, বিচিত্র সংস্কারের অধীন। আটান্ন প্রকার আচরণ বিধি, বিশ-পঁচিশ হাজার রকমের প্রায়শ্চিত্য ও দেবদেবীর প্রভাব দ্বারা তাদের জীবন নিয়ন্ত্রিত।

শাস্ত্র-পুথি তাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। পাথরের প্রাচীর ঘেরা অচলায়তন এর সকল দরজা-জানালা থাকে বন্ধ। অচলায়তন-এর বাইরে শোনপাংশু ও দর্শকদের বাস, তারা সকলেই অম্পূর্ণ অশুচি। অচলায়ন এর এই রূপটির মধ্যদিয়ে রবীন্দ্রনাথ তৎকালীন সমাজব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করেছেন। প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে দেখিয়েছে পঞ্চককে যে এ অচলায়তন এর কুসংস্কারের দেয়াল ভাঙ্গতে চায় চায় পরিবর্তন।

এ যেন প্রতিবাদী রবীন্দ্রনাথেরই প্রতিরূপ। পঞ্চক যেন অচলায়তনের মূর্তিমান বিদ্রোহের নাম। প্রতিবাদী আরেকটি চরিত্র পাই এখানে তিনি অচলায়তনের গুরু। শোনপাংশুদের কাছে তিনি দাদা ঠাকুর আর দর্শকদের কাছে তিনি গোসাই। বিদ্রোহের প্রয়োজনে তিনি যুদ্ধে প্রবৃত্ত হন।

 

 

অচলায়তনের সংকীর্ণতার প্রাচীর ভেঙ্গে দেন আবার নতুন উদ্যমে পঞ্চক, মহাপঞ্চক এমনকি শোনপাংশুদের সঙ্গে নিয়ে নতুন করে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। যে বিদ্যাচর্চার কেন্দ্রটি তিনি জ্ঞান-প্রেম-কর্ম ও আনন্দের জন্য গড়ে তুলেছিলেন তা আদর্শ ও লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে তিনি নিজেই তার বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং অচলায়তনের সংকীর্ণতার প্রাচীর ধূলিসাৎ করেন। এরূপ বিদ্রোহী প্রতিবাদী রবীন্দ্রনাথের সন্ধান মেলে তাঁর সৃষ্ট রচনাতে।

প্রকৃত স্বদেশের অভ্যন্তরীণ এই অচলায়তনকে রবীন্দ্রনাথ ভাঙতে চেয়েছেন। এরূপ স্থবিরতা ও যান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী রবীন্দ্রনাথকে পাই তাঁর ‘তাসের দেশ’ (১৩৪০) নাটকের বক্তব্যে। পরিবর্তনের রাজপুত্র জাতিভেদ প্রথা বিলুপ্ত চান, যান্ত্রিক নিয়মানুগত্যের পরিবর্তন ও স্বাধীন চিন্তাশক্তির বিকাশ চান।

 

গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

শুধু তাই নয় ‘প্রকৃতির প্রতিশোধ’ (১২৯১) নাটকে রবীন্দ্রনাথ জীবনবিমুখ সন্ন্যাস জীবনের প্রতিবাদ জানান। ‘বিসর্জন’ (১২৯৭) নাটকটি তাঁর সংস্কার মৃঢ়তার বিরুদ্ধাচারণ। ‘গুরু’ (১৩২৪) নাটকটিও তদ্রূপ। ‘মুক্তধারা’ ও ‘রক্ত করবী’ নাটকের মধ্যদিয়ে যন্ত্র সভ্যতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

আরও দেখুন :

Exit mobile version