আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় শেষ রক্ষা
শেষ রক্ষা
শেষ রক্ষা
দোড়ায় গলদ প্রহসনের (১২৯৯) নাট্যরূপান্তর শেষরক্ষা (১৩৩৪)। গোড়ায় গলদে শুধু মাত্র একটি সমাপ্তি সঙ্গীত ছিল। কিন্তু শেষরক্ষায় কয়েকটি গান যোজিত হয়েছে। তাতে নাটকটি সৌকর্য বৃদ্ধি পেয়েছে। গোড়ায় গলদ ও শেষরক্ষার বিষয়বস্তু একই কিন্তু কয়েকটি চমৎকার গানের সংযোগে সেই বিষয়ের পরিবেশনা আরো চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠেছে।
এ নাটরেক গানগুলি মুখ্যত প্রেম সঙ্গীত। প্রথম গানটিই কমলের: ডাকিল মোরে জাগার সাথি’। এই গানের ভেতর দিয়েই কমল কবি বিনোদনের প্রতি তার অনুরাগ নিবেদন করেছে।
এর পরের গান ইন্দুর ——– -“হায় রে, ওরে যায় না কি জানা’,
এর দ্বিতীয় গান ——– “যাবার বেলা শেষ কথাটি যাও বলে,
এর পর নেপথ্য থেকে শোনা গেল ——– কাছে যাবে ছিল পাশে হল ন যাওয়া’,
ইন্দুর গান —— লুকালে বলেই খুঁজে বাহির করা’,
বিনোদের গাওয়া ——- মুখপানে চেয়ে দেখি ভয় হয় মনে’,
চন্দ্রকান্তের গাওয়া ——- “জয় করে তবু ভয় কেন তোর যায় না’, প্রভৃতি গান ।
রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ প্রেমসঙ্গীতের অন্তর্গত এসব গান ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাট্যসাহিত্য
বীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে ছিলেন নাট্যকার ও নাট্যাভিনেতা। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক নাট্যমঞ্চে মাত্র ষোলো বছর বয়সে অগ্রজ জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত হঠাৎ নবাব নাটকে (মলিয়ের লা বুর্জোয়া জাঁতিরোম অবলম্বনে রচিত) ও পরে জ্যোতিরিন্দ্রনাথেরই অলীকবাবু নাটকে নামভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
১৮৮১ সালে তার প্রথম গীতিনাট্য বাল্মীকিপ্রতিভা মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকে তিনি ঋষি বাল্মীকির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ১৮৮২ সালে রবীন্দ্রনাথ রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে কালমৃগয়া নামে আরও একটি গীতিনাট্য রচনা করেছিলেন। এই নাটক মঞ্চায়নের সময় তিনি অন্ধমুনির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
গীতিনাট্য রচনার পর রবীন্দ্রনাথ কয়েকটি কাব্যনাট্য রচনা করেন। শেকসপিয়রীয় পঞ্চাঙ্ক রীতিতে রচিত তার রাজা ও রাণী (১৮৮৯) ও বিসর্জন (১৮৯০) বহুবার সাধারণ রঙ্গমঞ্চে অভিনীত হয় এবং তিনি নিজে এই নাটকগুলিতে অভিনয়ও করেন। ১৮৮৯ সালে রাজা ও রাণী নাটকে বিক্রমদেবের ভূমিকায় অভিনয় করেন রবীন্দ্রনাথ। বিসর্জন নাটকটি দুটি ভিন্ন সময়ে মঞ্চায়িত করেছিলেন তিনি।
১৮৯০ সালের মঞ্চায়নের সময় যুবক রবীন্দ্রনাথ বৃদ্ধ রঘুপতির ভূমিকায় এবং ১৯২৩ সালের মঞ্চায়নের সময় বৃদ্ধ রবীন্দ্রনাথ যুবক জয়সিংহের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। কাব্যনাট্য পর্বে রবীন্দ্রনাথের আরও দুটি উল্লেখযোগ্য নাটক হল চিত্রাঙ্গদা (১৮৯২) ও মালিনী (১৮৯৬)।
আরও দেখুন :