স্বাধীনতা তুমি

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ স্বাধীনতা তুমি

 

স্বাধীনতা তুমি

 

স্বাধীনতা তুমি

বাগানের ঘর, কোকিলের গান,
বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।
– শামসুর রাহমান

কবি যেন স্বাধীনতাকে বোঝাতে যেমন ইচ্ছে লেখা, আঁকা-আঁকি করা আর যত্ন করে আগলে রাখা ‘বন্ধুখাতা’র কথাটিই বলেছেন। আমরা কেউ আঁকতে পছন্দ করি, কেউ গাইতে, কেউ নাচতে বা অভিনয় করতে, কেউবা আবার লিখতে পছন্দ করি।

কেউ যদি পছন্দের এসব কাজে বাধা দেয় তখন আমাদের খুব খারাপ লাগে। আমাদের মনে হয় আমার সব অধিকার হারিয়ে ফেলেছি। ঠিক তেমনি করে পাকিস্তানিরা একদিন আমাদের ভাষার অধিকার, সংস্কৃতি চর্চার অধিকারসহ স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারটাও কেড়ে নিতে চেয়েছিল। তখন পুরো জাতিকে স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা দেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

 

স্বাধীনতা তুমি

 

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে তিনি দিয়েছিলেন তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ-

এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

এরপর বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ রাতের অন্ধকারে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির উপর। হত্যা করে অগণিত নিরপরাধ মানুষকে। সংঘটিত হয় মানব ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা। স্বাধীনতার ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে শহিদ হন ত্রিশ লাখ মানুষ। নির্যাতনের শিকার হন লাখো নারী। বিনিময়ে আমরা পাই আমাদের নতুন দেশ, নতুন পতাকা, নতুন মানচিত্র এবং স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার। যাঁদের মহান ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি সেই সব সূর্য সন্তানদের স্মরণে তৈরি করা হয়েছে ‘জাতীয় স্মৃতিসৌধ’। যার স্থপতি হলেন সৈয়দ মাইনুল হোসেন।

 

স্বাধীনতা তুমি

 

আমাদের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য সমগ্র দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। আমরাও এবার সব সহপাঠী সমানভাবে ১১টা দলে বিভক্ত হয়ে যাব। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ১১টি সেক্টরের সংখ্যানুসারে নিজেদের দলের নামকরণ করব।

তারপর বাংলাদেশের একটি মানচিত্র সংগ্রহ করে বা এঁকে তাতে মুক্তিযুদ্ধের সময়ের ১১টি সেক্টরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করব। এতে আমরা জানতে পারব বর্তমানে আমাদের এলাকাটি মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন সেক্টরের অধীনে ছিল।

তারপর ১১টা দল নিজেদের সংগ্রহ করা তথ্যের সাথে ছবি আঁকা, গড়া, নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি, লেখা ইত্যাদির সাথে মিলিয়ে প্রকাশের পরিকল্পনা করব।

 

স্বাধীনতা তুমি

 

এই অধ্যায়ে আমরা যেভাবে অভিজ্ঞতা পেতে পারি-

  • প্রত্যেকটি দল নিজেদের মতো করে আশেপাশের বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলব। পরিবার ও এলাকার বয়স্কদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার চেষ্টা করব। এ সাক্ষাৎকারগুলো আমরা মোবাইলে ধারণ করে রাখব বা লিখে রাখব।
  • তাছাড়া বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি অথবা অন্য কোন উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের বই, পত্রিকা সংগ্রহ করে তা থেকেও আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার চেষ্টা করব।

 

স্বাধীনতা তুমি

 

এই অধ্যায়ে আমরা যা যা করতে পারি-

  • মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আমরা প্রত্যেকটি দল তালিকা তৈরি করে বন্ধুখাতায় জমা করে রাখব।
  • প্রত্যেকটি দল মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে নিজেদের চিন্তামতো ছবি এঁকে তাতে মনের মতো রং করতে পারি। বিভিন্ন রঙের কাগজ, পত্রিকা, ছবি কেটে আঠা দিয়ে কাগজে লাগিয়ে পছন্দমতো কোলাজচিত্র তৈরি করতে পারি।
  • মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কিত গান, নাচ, ছড়া, কবিতা বা গল্প লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারি।
  • প্রত্যেক দল চাইলে মাটি, কাঠ ইত্যাদি দিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধের কাঠামো গড়তে পারি। স্বাধীনতা দিবসের সাথে সম্পর্কিত অন্য যে কোনো কিছু গড়ে উপস্থাপন করতে পারি।

এবার ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা সব দলের তৈরি করা শিল্পকর্মগুলো শ্রেণিকক্ষে প্রদর্শন করব। প্রত্যেকটি দল নিজেদের পরিকল্পনা মতো স্বাধীনতার গান, নাচ, নিজেদের তৈরি করা নাটিকা, কবিতা বা ছড়ার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবসে সকল বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখাব।

মূল্যায়ন ছক

স্বাধীনতা তুমি

শিক্ষার্থীর নাম :

রোল নম্বর :

তারিখ:

শিক্ষক পূরণ করবেন: টিজিতে নির্দেশিত কাজ শেষ করে তার আলোকে প্রযোজ্য বিবৃতিতে টিক দিন

 

স্বাধীনতা তুমি

 

অভিভাবকের মন্তব্য ও স্বাক্ষর:                                                                                  তারিখ:

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment