আজকের আমাদের আলোচনার বিষয় রবীন্দ্র নাটককে ঐতিহ্যের সাথে যুক্তিকরণ।
রবীন্দ্র নাটককে ঐতিহ্যের সাথে যুক্তিকরণ

রবীন্দ্র নাটককে ঐতিহ্যের সাথে যুক্তিকরণ
রবীন্দ্র নাটককে ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত করে দেবার প্রয়োজনবোধের মধ্যে নিহিত রয়েছে গান-ব্যবহারের একটি মৌলিক কারন। যাকে ইন্দিরা দেবী চৌধুরানী শান্তি পর্ব বলেছেন। সেই সময়ই রবীন্দ্রনাথ আবিষ্কার করলেন নিজের নাট্যাদর্শ ও মঞ্চভাবনা।
সেই মঞ্চাদর্শ ও নাট্যাদর্শ গড়ে উঠেছে দেশজ রীতির উপর ‘varnacular tradition এর কাঠামোর ভিত্তিতে । ‘রবীন্দ্রনাথের নাটকে আমরা আমাদের জাতীয়-নাট্যরীতির প্রায় সবই পেলাম-তত্ত্ব, সংগীত প্রাধান্য, গানের দল আসরে অভিনয় উপযোগী নাট্যরীতি এবং প্রতিকধর্ম।

এলো বিবেকের মতো ঠাকুরদা বা দাদাঠাকুর, এলো বাউল বৈরাগী, ভ্রাম্যমান গায়ক, সাথে সাথে এলো গানের ধারা। তাঁর নাটককে ঐতিহ্যের উপরে প্রতিপাত করে গভীর প্রয়োজন বোধে রবীন্দ্রনাথ নাটকে গান ব্যবহার করেছেন। তিনি লিখেছেন ‘আজও দেখতে পাই বাংলা সাহিত্যের গান যখন তখন যেখানে সেখানে অনাহুত অনধিকার প্রবেশ করতে কুণ্ঠিত হয় না।
এতে অন্যদেশীয় অলংকার শাস্ত্র সম্মত রীতিভেদ হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের রীতি আমাদের স্বভাব সংগত। তাকে ভৎসর্না করা যায় না। আমাদের আদর্শ আমাদের নিজের মন আপন আনন্দের তাগিদে স্বভাবতই সৃষ্টি করবে। ‘বিদেশী অলংকার শাস্ত্র পড়বার বহু পূর্ব থেকে আমাদের নাট্য, যাকে আমরা যাত্রা বলি সে তো গানের সুরেই ঢালা।’

পাশ্চাত্য অলংকার শাস্ত্র সম্মত নাটক রচনা কালে উত্তরাধিকারলব্ধ সাংগীতিক ভাবনা ভিন্ন রুচির উচ্ছাসকে বাঁধা দিয়েছে, তেমনি উদাহরণ পাই আমরা ‘রাজা ও রানী’ এবং ‘ বিসর্জন’ নাটকে। তারপর যখন নাটক রচনায় আয়ত্ব করে নিতে চেয়েছেন দেশজ ঐতিহ্যকে তখন সেই সাংগীতিক স্বভাব রবীন্দ্রনাটকে আত্মপ্রকাশ করেছে কুণ্ঠাহীনভাবে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটকের তালিকা:
১. রুদ্রচণ্ড – Rudrachanda (১৮৮১)
২. প্রকৃতির প্রতিশোধ – Prakritir Pratishodh (১৮৮৪)
৩. নলিনী – Nalini (১৮৮৪)
৪. রাজা ও রাণী – Raja o Rani (১৮৮৯)
৫. তপতী – Tapashi (১৯২৯)
৬. বিসর্জন – Bisharjan (১৮৯০)
৭. মালিনী – Malini (১৮৯৬)
৮. লক্ষ্মীর পরীক্ষা – Laxmir Parkkha (১৮৯৯)
৯. শারদোৎসব – Sharoduthsob (১৯০৮)
১০. মুকুট – Mukut (১৯০৮)
১১. প্রায়শ্চিত্ত – Prayashchitta (১৯০৯)
১২. রাজা – Raja (১৯১০)
১৩. ডাকঘর – Daakghar (১৯১২)
১৪. অচলায়তন – Achalayatan (১৯১২)
১৫. ফাল্গুনী – Falguni (১৯১৬)
১৬. গুরু – Guru (১৯১৮)
১৭. অরূপরতন – Arupartan (১৯২০)
১৮. ঋণশোধ – Rinshudh (১৯২১)
১৯. মুক্তধারা – Muktadhara (১৯২২)
২০. গৃহপ্রবেশ – Grihoprobesh (১৯২৫)
২১. চিরকুমার সভা – Chirakumar shova (১৯২৬)
২২. শোধবোধ – Shodhbodh (১৯২৬)
২৩. নটীর পূজা – Natir Puja (১৯২৬)
২৪. রক্তকরবী – Raktakarabi (১৯২৬)
২৫. পরিত্রাণ – Paritran (১৯২৯)
২৬. কালের যাত্রা – Kaler Jatra (১৯৩২)
২৭. চণ্ডালিকা – Chandalika (১৯৩৩)
২৮. তাসের দেশ – Tasher Desh (১৯৩৩)
২৯. বাঁশরী – Bashari (১৯৩৩)
আরও দেখুন :